ছেলেদের নিয়ে কিছু কথা কান্না করতে বাধ্য করবে
যে ছেলেরা পাশে বসা মেয়েটিকে ওড়না ঠিক করতে দেখলে আলগোছে চোখ সরিয়ে নেয় সেই ছেলেগুলি ভীষণ লাজুক হয়।
গাদাগাদি বাসের ভীরে কোনো মেয়েকে দাঁড়ানো দেখলে নিজের সীটটা ছেড়ে দিয়ে বলে...আপু আপনি বসুন।
মেয়েটি একটি কৃতজ্ঞতার হাঁসি দিয়ে বসে ঠিকই তারপর তাদের দিকে আর ফিরেও তাকায় না, সে ছেলে গুলো চিরকালই অগোচরে থেকে যায়।
সেই ছেলে গুলি টিউশনির টাকা একটু একটু করে খরচ করে, মাসের শেষ দিন গুলিতে খাবার বিল দেওয়ার ভয়ে সকালে না খেয়েই ক্লাসে চলে যায়।
মা ফোন করে জানতে চায় 'বাবা' দুপুরে কী খেয়েছিস, হাতের শুকনো পাউরুটির দিকে এক পলক তাকিয়ে মাকে উত্তর দেয়, পুইশাক, বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছ আর ডাল।
দুপুরের অসহ্য রোদে কোলাহলের রাস্তায় আধা কিলো হেটে ছেলেটি টিউশনে যায়, ক্রিং ক্রিং করে পকেটের ফোনটা জানান দেয় বাবার ফোন।
কপালের ঘাম মুছে মলিন হয়ে যাওয়া স্যান্ডেলের দিকে তাকিয়ে বলে, হ্যা বাবা ভালো আছি আমি।
এতো টুকু বয়সেই ছেলেগুলোর কেনো জানি প্রবল আত্নসম্মান বোধ এসে ভর করে, বাড়ি থেকে টাকা চাইতে লজ্জা পায়।
এই ছেলেদের একজন করে প্রেমিকা থাকে, হুডখোলা সিকশায় চলতে চলতে একদিন প্রেমিকার হাত চেপে ধরে, এককাপ মালাই চা দু'জন ভাগ করে খেতে গিয়ে, হাঁসতে হাঁসতে গড়িয়ে পড়ে।
প্রিয়সীর শ্যাম বর্ণের বড় বড় চোখের দিকে তাকিয়ে কবিতা রচনা করে, তার পর একদিন প্রেমিকার বিয়ের কার্ড হাতে নিয়ে, নিষ্ক্রিয় দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।
রাতের বেলা পাশে শোওয়া বন্ধুটি ঘুমিয়ে পড়লে মুখে বালিশ চেপে চোখের জল ফেলে, পুরুষের কান্নায় কোনো শব্দ থাকতে নেই, বন্ধুদের আড্ডায় প্রথম সিগারেটে টান দিয়ে খুশখুশ করে কেশে উঠে, প্রথম প্রেমের সাথে সাথে তার ফুসফুস প্রথম নিকোটিনেরও স্বাদ পায়।
এরপর বর্তমানের তাড়নায় অতীতকে ভুলে গিয়ে আবার চলতে থাকে, ঈদ-পুজোর ছুটিতে বাস ট্রেনের ঝাঁকিতে এক প্রকার গলিতো হয়ে সে মায়ের কোলে গিয়ে পৌছায়।
মায়ের প্রচন্ড ধমক খেতে খেতে ব্যাগ থেকে বের করে, একটা তাঁতের শাড়ি, ভাইয়ের জন্য দুটো টিশার্ট, মায়ের রাগান্বিত আড়ালে ছেলেটি দেখতে পায় এক টুকরো হাঁসি।
সেই ছেলেদের মধ্যে কয়েকজন লড়াই করতে করতে হয়ে উঠে বিসিএস ক্যাডার বা মস্তবড় অফিসার, তখন তাদের ঘিরে ইতিহাস রচনা হয়, পাশের বাড়ির বাবা-মা ছোট্ট ছেলেটিকে তাকে দেখিয়ে বলে, ঐ যে দেখছিস চোখে সানগ্লাস পড়া মস্তবড় কালো গাড়ি নিয়ে এলো, লেখাপড়া করে তোকে ঠিক তার মতোই হতে হবে।
আর লড়াই করতে করতে হেরে যাওয়া ছেলেগুলি হয়ে উঠে শিক্ষিত কেরানি, তাদের জীবন জুরে শুধুই দীর্ঘশ্বাস, তারা কখনই কারো গল্পের নায়ক হয়ে উঠে না।
পরবর্তী পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ সবাইকে...