কথা গুলো সবার একবার হলেও শুনা উচিত
কখনো কখনো প্রিয় কিছু মানুষের জন্য নিজের জীবনকে বড্ড বিষাক্ত মনে হয়, তখন তোমার উচিত চারপাশের মানুষকে দোষারোপ বাদ দিয়ে, নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া, তোমাকে আয়নার দিকে তাকিয়ে বুঝতে হবে, ইদানিং তোমার মাঝে সেই তুমিটি নেই।
কারণ তুমি তোমার নিজের অবস্থান থেকে "বিচ্ছিত" হয়তো তুমি তখন আয়নার সামনে নিজের ভুল গুলো খুঁজে পাবে, কিন্তু এর অর্থ এই না যে তুমি তোমার ভুলের জন্য নিজেকে ঘৃণা করতে শুরু করবে, এর একমাত্র অর্থ হলো, তোমার নিজেকে পরিবর্তন করার উপায় গুলো খুঁজে বের করতে হবে।
পরিবর্তনের প্রথম শর্ত হচ্ছে, নিজের ভুল গুলোকে স্বীকার করে নিতে হবে, তারপর সেই ভুল গুলোকে গলা টিপে হত্যা করতে হবে, তোমার ভুল গুলোকে তুমি হত্যা করতে পারলেই নতুন একটি পথ খুঁজে পাবে, হয়তো সেই পথ সঠিক পথে চলতে শুরু করবে, কিংবা আবার ভুল রাস্থায় চলে যাবে।
কিন্তু তুমি এইসব কিছুই করবে না, কারণ তুমি প্রতিনিয়ত পৃথিবীকে দোষ দিয়ে, নিজের আত্মা হালকা করে ফেলতেছো, চারপাশের মানুষকে দোষ দিয়ে, মনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চাও, হয়তো তুমি মাঝে মাঝে তোমার নিজের জীবনটিকে অস্বীকার করে ফেলো, ধরো তুমি কারো উপর রাগান্বিত হয়ে তোমার মোবাইলটি ছুড়ে ফেললে, এর জন্য তুমি হয়তো তাকে দোষারোপ করবে না।
কারণ সে তোমাকে রাগান্বিত করেছে, কিন্তু নিজের রাগান্বিত হওয়া প্রতিক্রিয়ার ফলাফল দিনশেষে তোমাকেই ভোগ করতে হবে, সহজ ভাবে বলতে গেলে, কেউ যখন তোমাকে কষ্ট দেয়, তখন তুমি হয়তো সেই কষ্ট সইতে পারো না, কিন্তু সেই কষ্টের প্রতিক্রিয়ায় তুমি যখন নিজেকেই কষ্ট দেও, সেটির জন্য দিনশেষে তোমার নিজেকেই ভোগতে হবে।
কারণ নিজেকে উপলব্ধি করার যথেষ্ট ক্ষমতা তোমার আছে, একটি সময় দেখবে যেই মানুষটি তোমাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিয়েছে, কিছুদিন পর দেখবে সে সবকিছু অস্বীকার করবে, তখন সে তোমাকেই বলবে সব কিছুর জন্য তোমার নিজের পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন, তখন তুমি তার মুখ থেকে অনেক কথাই শুনবে।
কারণ এসব না বললে তারা তাদের নিজের দোষকে আড়াল করতে পাবে না, তোমাকে বুঝতে হবে তোমার ভালো বৈশিষ্ট্য এবং খারাপ বৈশিষ্ট্য, তোমার তখন উপলব্ধি করতে হবে যে তোমার জীবনে সুন্দর কিছু রয়েছে, যে জিনিস গুলো তোমাকে নিজেই পরিবর্তন করে উপকৃত হতে হবে।
অন্য কাউকে দোষারোপ করে, কখনো তুমি তোমার নিজের জীবনকে সুন্দর করতে পারবে না, "আমি বিশ্বাস করি" যারা অনেক বাজে ভাবে ঠকে তারা কোনোদিন কাউকে ঠকাতে পারে না, বড়জোর মানুষকে বিশ্বাস করা ছেড়ে দেয়,"আমি বিশ্বাস করি" যারা ধ্বংস হয় তারা কোনোদিন কাউকে নিঃসঙ্গ করতে পারে না, বড়জোর হারিয়ে দিতে শিখে যায়।
একটি কথা সবাই মনে রাখবেন, জীবন শিখিয়ে দেয় কিন্তু ধ্বংস করতে পারে না, "আমি বিশ্বাস করি" যারা চরম ভাবে অপেক্ষা করতে পারে, তারা কখনো কাউকে অপেক্ষা করাতে পারে না, বড়জোর তারা সবকিছু সম্পর্কে উদাসীন হতে শিখে যায়, তখন তাদের উপর আর কোনো কিছুই প্রভাব ফেলতে পারে না।
যাদের কথা বলার কেউ থাকে না, তারাই অন্যের কথা মন দিয়ে শুনে, সম্পর্ক যাদের জীবনকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে, তারা কোনোদিন কোনো সম্পর্ক ভাঙ্গতে পারে না, বড়জোর তারা কখনো আর কোনো সম্পর্কে জড়ায় না, যারা ভীষণ ভাবে তাদের ভালোবাসার মানুষের কাছে অবহেলা পায়, তারা কখনো অন্য কাউকে অবহেলা করে না।
যাদের নিজস্ব গন্ধ কমে যায়, তারাই প্রতিটি মানুষের বুকের খুব কাছাকাছি গন্ধটিকে চিনতে পারে, ব্যথা গিলতে গিলতে যাদের গোটা শরীরটি অবশ হয়ে গেছে, তারাই অন্যের ব্যথাকে খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারে, যারা সবসময় মানুষের কাছে ছোট হয়, তারা অন্য কাউকে ছোট করার আগে অন্তত দশবার ভাবে, কারণ তারা সেই জ্বালাটি বুঝে।
আমি বিশ্বাস করি যারা অন্ধকারকে ভয় পায়, তারাই একমাত্র প্রত্যেককেই আলো দেখাতে পারে, যারা নিজেদের কাছে পরিষ্কার নয়, তাদের ভিতর অহংকার করার কিছুই বাকি নেই।
আচ্ছা কয়জন ছেলে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে, যে আজ তার গার্লফ্রেন্ড ধর্ষণের স্বীকার হলেও, সে তাকেই বিয়ে করতে রাজি আছে, কয়জন মেয়েই বা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে, আজ তার বয়ফ্রেন্ড সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা অথবা একটি হাত হারালে সে তাকেই বিয়ে করবে, ১০০% ছেলে মেয়ে থেকে ৯০% ছেলে মেয়ের এটি বলতে পারবে না, আর বাকি ১০% ছেলে মেয়েরা যদি বলেও সেটি শুধু মুখে মুখেই বলবে।
খারাপ কিছু ঘটে গেলে আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে যদি, আপনার লড়াই করে টিকে থাকার মানসিকতা না থাকে, তাহলে সেটিকে ভালোবাসা বলা হয় না, সেটিকে বলা হয় রিলেশন, আর রিলেশন হচ্ছে দশজনকে দেখে আপনি একজনকে বেছে নিয়েছেন, তার গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করেননি, আর যখন দুর্ভাগ্য বশত তার গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে, তখন আপনিও তাকে হারিয়ে ফেলবেন।
মানুষের গ্রহণযোগ্যতায় এবং অগ্রহণযোগ্যতায় কিছুই যায় আসে না, ধরেন ছেলেটি এখনো বেকার এদিকে মেয়েটির বিয়ের সম্বন্ধ এসেছে, মেয়েটি ছেলেটির কথা ভেবে বারবার তার বিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছে, রাত জেগে চিন্তার চোখে কালশিটে দাগ হয়ে, মেয়েটি এখন রাত জাগা ক্লান্ত, এর নামই ভালোবাসা, ছেলেটি বারবার সুন্দরি মেয়েদের বিয়ের প্রস্তাব পেয়েও ফিরিয়ে দেয়, কারণ ছেলেটি তার কালো প্রেমিকার কাছেই তার সুখ খুঁজে পায়, এর নামই ভালোবাসা, স্বামীর পাঁচবছরের জেল হয়েছে, প্রতিদিন তার স্বামীর সাথে দেখা করতে দেবে না জেনেও, স্ত্রী সকাল থেকে জেল খানায় গিয়ে বসে থাকে, এর নামই ভালোবাসা।
রিলেশনে জড়ানো অনেক সস্তা ও সহজ ব্যাপার, আজকে রিলেশন করে কালকেই রিলেশনশিপে স্ট্যাটাস দেওয়া, পরশু ঘুরতে যাওয়া আর কথায় কথায় I Love You বলা, এগুলো সবাই করতে পারে, কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসতে সবাই পারে না, যেখানে ভালোবাসা আছে, সেখানে নিজের কাছে একটি অনেষ্ট কমিটমেন্ট আছে, আর তা হলো যাই হোক না কেন নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে, অন্তত শেষ টুকু দেখা।
তাই আমি আপনাদেরকে একটি কথাই বলবো, নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে মন থেকে ভালোবাসুন, নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে একটু বোঝার চেষ্টা করুন, দেখবেন আপনাদের সম্পর্কটি আরও বেশি মজবুত হয়ে যাবে, ভালো থাকুন সবাই আপনাদের ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে।
কোনো মেয়েকে সত্যিকার অর্থে ভালো লেগে যাওয়ার পর, তাকে ভালোবাসি বলার আগে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন, তাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারবেন কিনা, প্রচণ্ড বিপদে মেয়েটি যদি আপনার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে সেই হাতটি আপনি শক্ত করে ধরে রাখতে পারবে কিনা, যদি পারেন তাহলেই তাকে ভালোবাসার কথা বলেন, আর যদি না পারেন তাহলে তাকে ভুলে যান, যদি সেটিও না পারেন তাহলে মনে রাখবেন সমাজ খুব শীঘ্রই একটি ব্যর্থ প্রেমিক পেতে যাচ্ছে, আর আপনি পেতে যাচ্ছেন, অসংখ্য কষ্টকর একটি রাত, আর স্বরচিত কিছু কবিতা।
ভালোবাসা মানে দু'জন মিলে একসাথে ফুচকা খাওয়া নয়, একসাথে রিক্সায় ঘুরা নয়, একসাথে মুভি দেখা নয়, দু'জনে লুকিয়ে লুকিয়ে চুমু খাওয়া নয়, এগুলো শুধু মাত্র দু'জনের কাছে আসা, একজন আর একজনের প্রতি অনুভুতি প্রকাশ করা, আর দু'জন মিলে কিছু সময় কাটানো।
কিন্তু এর বাহিরেও ভালোবাসার একটি অর্থ আছে, সেটি হলো দায়িত্ব, একটি মেয়েকে ভালোবাসি কথাটি বলা মূল অর্থ, মেয়েটির প্রতি আপনার যেই ভালোবাসা আছে, তার দায়িত্ব আপনি নিতে চাচ্ছেন, মেয়েটির সুখের দায়িত্ব, আনন্দের দায়িত্ব, কষ্টের দায়িত্ব, মেয়েটিকে আপনি প্রচণ্ড ভালোবাসেন, তার জন্য কয়েক সকাল না খেয়ে নুপুর কিনে তার পায়ে পড়িয়ে দিচ্ছেন, কয়েক বিকাল রিক্সায় না উঠে হেঁটে টিউশনি করাতে যাচ্ছেন, পায়ে হেঁটে বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে তাকে গোলাপ কিনে দিচ্ছেন, এটি করা খুব ভালো কিন্তু এই সবকিছুরও একটি শেষ আছে, এই সবকিছু শেষ হয় আর একটি নতুন সম্পর্ক শুরুর জন্য, মেয়েটি একেবারেই আপনার কাছে চলে আসতে চায়, তখন তার হাতটি শক্ত করে আপনাকেই ধরে রাখতে হবে।
কিন্তু আপনি যদি তখন তার হাতটি শক্ত করে ধরে রাখতে না পারেন, তখন মেয়েটি একাকীত্ব হয়ে আপনাকে ভালো বাসতে বাসতে অন্য আর একজনের ঘরে চলে যাবে, তার দেহ পড়ে থাকবে অন্যের ঘরে, আর মন পড়ে থাকবে আপনার কাছে, আপনাকে সে সবসময় প্রতারক ভাববে, মেয়েটি আপনাকে সবসময় ভুল বোঝবে।
মেয়েরা যাকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসে, তাকে কোনো ভাবেই ঘৃণা করতে পারে না, আর আপনি বসে বসে কাঁদবেন, আর আপনার সকালে না খেয়ে কিনে দেওয়া নুপুর, দু'জনের কাটানো সেই একলা দুপুর সবকিছুই মিথ্যে হয়ে যাবে, তখন আপনার আর কিছু করার থাকবে না।
দরকার হলে সবসময় একা একা থাকবেন, তাহলে অনেক সুখে থাকতে পারবেন, কিন্তু একজনকে ভালোবাসবে অথচ তাকে ধরে রাখতে পারবেন না, তার পর তার সাথে কাটানো স্মৃতি গুলোকে নিয়ে, তীব্র কষ্টে জীবন কাটাবেন, এটির কোনোই মানে হয় না।
পরিশেষে সবাইকে একটি কথাই বলবো, চিন্তা করে ভালোবাসা হয় না, ভালোবাসা হঠাৎ করে হয়ে যায়, কিন্তু এর পরেও কাউকে ভালোবাসার আগে একটু চিন্তা করে নেওয়া ভালো, যদি চিন্তা করতে ইচ্ছে না হয়, তাহলে দিনের শেষে মেয়েটিকে ফিরিয়ে দিবেন না, সবচেয়ে বড় সেক্রিফাইস করতে হলেও করেন, কারণ মেয়েটিও সবচেয়ে বড় সেক্রিফাইস করে আপনার কাছে এসেছে, তার হাতটি শক্ত করে ধরে রাখুন, কোনো অবস্থাতেই সেই হাত ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
আমাদের এই পোস্টটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে দয়াকরে কমেন্টে বলে দিয়ে যাবেন, আর আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে একদমই ভুলবেন না।
পরবর্তী পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ
Script: Collected